কোনি(koni)মতি নন্দী রচিত -কোনি উপন্যাস download pdf (পর্ব-১)

কোনি মতি নন্দী রচিত । দশম শ্রেণির বাংলা উপন্যাস। class x bangali Sahitya-Sonchayan ।। সাহিত্য সঞ্চয়ন দশম শ্রেণী উৎস সন্ধানে
11 min read



ছবি :- পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পাঠ্যপুস্তক 



                    লেখক-:  মতি নন্দী


লেখকের পরিচিত :- মতি নন্দী (১০ জুলাই ১৯৩১ - ৩ জানুয়ারি ২০১০) ছিলেন ভারতের কলকাতার একজন বাঙালি লেখক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মতি নন্দী ছিলেন মূলত ক্রীড়া সাংবাদিক এবং উপন্যাসিক ও শিশু সাহিত্যিক। তিনি আনন্দ পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। তার বিখ্যাত উপন্যাস 'কোনি'। লেখকের সম্বন্ধে আরো পড়ুন


জ বারুণী । গঙ্গায় আজ কাঁচা আমের ছড়াছড়ি । 


ঘাটে থই থই ভিড় । বয়স্কদের ভিড়টাই বেশি । সদ্য ওঠা কঁচা আম মাথার উপর ধরে , ডুব দিয়ে উঠেই ফেলে দিচ্ছে । ভেসে যাচ্ছে আম । কেউ দুরে ছুড়ে ফেলছে । 

ছােটো ছােটো দলে ছেলেরা জলে অপেক্ষা করে আছে আম সংগ্রহের জন্য । কেউ গালাজলে দাঁড়িয়ে , কেউবা দূরে ভেসে রয়েছে । আম দেখলেই গুড়োহুড়ি পড়ে যায় । একসঙ্গে দু - তিনজন চিৎকার করতে করতে জল তোলপাড় করে এগিয়ে যায় । যে পায় , প্যান্টের পকেটে রেখে দেয় পকেটটা আমে ভরে গিয়ে ফুলে উঠলে জল থেকে উঠে ঘাটের কোথাও রেখে আসে । সেই আমে হাত দেওয়ার সাধ্য কারোর নেই । পরে আমগুলাে ওরা বিক্রি করে পথের ধারে বসা বাজারে , অনেক কম দামে । 


আজ গঙ্গায় ভাটা , জল অনেকটা সরে গেছে ঘাট থেকে । সিড়ি এবং তার দু - ধারে ইটবাঁধানাে ঢালু পাড় শেষ হয়ে কিছুটা পলিমাটি , তারপর জল । স্নান করে কাদা মাড়িয়ে বিরক্ত মুখে উঠে আসতে হচ্ছে । তারপর অনেকে যায় ঘাটের মাথায় , ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসা বামুনদের কাছে , যারা পাসা নিয়ে জামাকাপড় জমা রাখে , গায়ে মাখার সরষে বা নারকেল তেল দেয় এবং কপালে চন্দনের ছাপ আঁকে । রাস্তার একধারে বসা ভিখারিদের অনেকে উপেক্ষা করে , কেউ কেউ করে না । দু - ধারের ছোটো ছােটো নানান দেবদেবীর দুয়ারে এবং শিবলিঙ্গের মাথায় ঘটি থেকে গঙ্গাজল দিতে দিতে , কাঠের , প্লাস্টিকের , লােহার , খেলনার ও সাংসারিক সামগ্রীর দোকানগুলির দিকে কৌতুহলী চোখ রেখে অধিকাংশই বাড়ির দিকে এগােবে । পথের বাজার থেকে ওল বা থােড় বা কলম্বা লেবু ধরনের কিছু হয়তাে কিনলেও কিনতে পারে । তারপর , রােদে তেতে ওঠা রাস্তায় খালি - পা দ্রুত ফেলে বাড়ি পৌঁছাবে বিরক্ত মেজাজে । 


তেলচিটে একটা ছেঁড়া মাদুরে উপুড় হয়ে বিষ্ণুচরণ ধরও দলাই - মালাই করাতে করাতে বিরক্ত মুখে গভঙ্গার দিকে তাকিয়ে । বিষ্ট ধর (পাড়ায় বেষ্টাদা ) আই . এ . পাশ , অত্যন্ত বনেদি বংশের , খান সাতেক বাড়ি ও বড়ােবাজারে ঝাড়ন মশলার কারবার এবং সর্বোপরি সাড়ে তিন মণ একটি দেহের মালিক । ওরই সমবয়সি চল্লিশ বছরের একটি বিশ্বস্ত অস্টিন সর্বত্র ওকে বহন করে । 

বিষ্টু ধরের বিরক্তির কারণ হাত পনেরাে দূরের একটা লােক । পরনে সাদা লুঙ্গি আর গেরুয়া পাঞ্জাবি , কাধে রঙিন ঝোলা । তার দিকে পিট পিট করে তাকাচ্ছে আর মাঝে মাঝে মুচকি হাসছে। বিষ্টু বুঝতে পেরেছে , লােকটা হাসছে তার দেহের আয়তন দেখে । এরকম হাসি , বাচ্চা ছেলেরাও হাসে । বিষ্ঠু তখন দুঃখ পায় , তার ইচ্ছা করে ছিপছিপে হতে । 


কিন্তু বিষ্টু বিরক্ত হচ্ছে যেহেতু এই লােকটা মােটেই বাচ্চা নয় । চোখে পুরু লেন্সের চশমা । নুন আর গােলমরিচের গুঁড়াে মেশালে যেমন দেখায় , মাথার কদমছাট চুল সেই রঙের।বয়সটা পঞ্চাশের এখারে বা ওধারে বছর পাঁচেকের মধ্যে হতে পারে। লােকটার গায়ের রং বুলােমাখা পােড়ামাটির মতাে । আর চোখের চাহনি । ধূসর মণি দুটো দেখলে মনে হবে বােধহয় সূর্যের দিকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে তাকিয়ে থেকেই মণির কালাে রংটা ফিকে হয়ে গেছে । চাহনিটা এমন , দেখলে মনে হয় যেন তা

র মনের সঙ্গে মেলে না সেইসব ব্যাপারগুলাে ব্লোটর্চের মতাে পুড়িয়ে দিয়ে ভিতরে সেঁধিয়ে যাবে । চোয়াল দুটোকে শক্ত করে ধরে আছে জেদ । 


মালিশওলা ডান হাঁটুটা বিষ্টুর কোমরে চেপে ধরে মেরুদণ্ড বরাবর ঘাড় পর্যন্ত দ্রুত ওঠানামা করাতে লাগল পিস্টনের মতাে ! বার দশেক এইভাবে হাঁটু ব্যবহারের পর মালিশওলা নমস্কারের ভঙ্গিতে হাতের তালু জোড়া করে বিষ্টুর পিঠে জোড়াতালুর কোদাল চালাল । 


এরপর বিষ্টু চিত হবার চেষ্টা করল । পারছিল না , মালিশওলা ঠেলেঠুলে গড়িয়ে দিতেই সে অভীষ্ট লাভ করল । আব্রুরক্ষাকারী গামছাটি ঠিকঠাক করে বিষ্টু গম্ভীর স্বরে নির্দেশ দিল , “ তানপুরাে ছাড় । ” 

মালিশওলা দশ আঙ্গুল দিয়ে বিষ্ণুর সারা শরীরের চর্বিগুলাে খপাখপ খামচে টেনে টেনে ধরে ছেড়ে দিতে লাগল  “ তবলা বাজল । ” 

ছবি :- পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পাঠ্যপুস্তক 

মালিশওলা দশ আঙুল দিয়ে বিষ্ণুর গলা থেকে কোমর অবধি ধপাধপ চাঁটাতে শুরু করল । চোখ ঝুঁজে প্রবল আরামে নিশ্বাস ফেলতে গিয়ে তার মনে হলাে , লােকটা নিশ্চয় এখন ফ্যাকফ্যাক করে হাসছে । বিষ্টু তখন খুবই বিরক্ত বােধ করে বলল , “ সারেগামা কর । ”


মালিশওলা নির্দেশ পেয়েই আঙুলগুলাে দিয়ে হারমােনিয়াম বাজাতে লাগল বিষ্টুর সর্বাঙ্গে । আঙুলগুলাে শরীরে কিলবিল করায় সুড়সুড়ি লাগছিল এবং তারই প্রতিক্রিয়ায় চর্বি থলথল করে কেঁপে উঠতেই বিষ্টু শুনল খুকখুক হাসির শব্দ । 


চিত হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বিষ্টু বলল ,    “  এতে হাসির কী আছে  ? ” 


সেকেন্ড কুড়ি পরে বিষ্টু জবাব শুনল , ম্যাসেজ হচ্ছে না সংগীতচর্চা হচ্ছে ? ” 


“ যাই হােক না , তাতে আপনার কী ? ”


 “ ব্লাডপ্রেশারটার মেপেছেন ? ” 


“ আপনার দরকার ? ” 


“ ব্লাড সুগার পরীক্ষা করিয়েছেন ? কোলেস্টেরল লেভেলটাও দেখেছেন কি ? ”


 “ কে মশাই আপনি , গায়ে পড়ে এত কথা বলছেন। চান করতে এসেছেন , করে চলে যান । ”


 “ তা যাচ্ছি । তবে আপনার হার্টটা বােধহয় আর বেশিদিন এই গন্ধমাদন টানতে পারবে না । ”


 “ কী বললেন ! ” 


বিষ্টু ধর উঠে বসার জন্য প্রথমে কাত হয়ে কনুইয়ে ভর দিয়ে মাথাটি তুলল । তারপর দু - হাতে মেঝেয় চাপ দিয়ে উঠে বসল । 


লােকটি কাঁচুমাচু হয়ে বলল , “ অবশ্য হাতি কিংবা হিপাের কখনাে করােনারি অ্যাটাক হয়েছে বলে শুনিনি , সুতরাং আমি হয়তাে ভুলও বলতে পারি ”



বিষ্টু ধর রাগে কথা বলতে পারছে না , শুধু চোখ দিয়ে কামান দাগতে লাগল । লােকটি পাঞ্জাবি খুলল । লুঙ্গি খুলল । ভিতরে হাফ প্যান্ট।


অবশেষে বিষ্টু ধর কোনােক্রমে বলল , “ আপনাকে যে কী বলব ভেবে পাচ্ছি না । ” 


“ আমার বউ ঠিক এই কথাই বলে । ”


 “ আপনি একটা নুইসেন্স । ”


 “ আমার ক্লাবের অনেকে তাই বলে । ” 


“ আপনার মতাে লােককে চাবকে লাল করা উচিত। ” 


লােকটি আবার ছেলেমানুষের মতাে পিটপিট করে তাকাল ।


 “ আচ্ছা , আমি যদি আপনার মাথায় চাঁটি মারি , আপনি দৌড়ে আমায় ধরতে পারবেন ? ”


 কথাগুলাে বলেই লােকটি এক জায়গায় দাঁড়িয়েই ছােটার ভঙ্গিতে জগিং শুরু করল । অনেকে তাকাল , অনেকে ভাবল পাগল ।


 বিষ্ণু হতভম্ভ হয়ে লােকটির জগ করা দেখতে লাগল । চাঁটি মারার ভঙ্গিতে হাতটা তুলে লােকটি হঠাৎ বিষ্টুর দিকে ছুটে এল । বিষ্টু ডুব দেওয়ার মতাে মাথাটা নীচু করল । লােকটি হাত তুলে রেখেই পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল ।


“ পারবেন ধরাতে যদি চাঁটিয়ে যাই ? আমার কিন্তু আপনার থেকে অনেক বায়েস । ” 


জগ করতে করতে লােকটি আবার এগিয়ে আসছে । বিষ্টু ধর বুনাে মােষের মতাে তেড়েফুঁড়ে উঠে দাঁড়াল । তাইতে লােকটি দাঁড়িয়ে পড়ল । তারপর নাচের ভঙ্গিতে শরীরটাকে পেন্ডুলামের মতাে ডাইনে এবং বামে দুলিয়ে তিড়িং তিড়িং লাফালাফি শুরু করল । বিষ্টু থাবার মতাে দুটো হাত তুলে অপেক্ষা করছে । দৃশ্যটা অনেককে আকৃষ্ট করল ।


 “ আমি রােজ একসারসাইজ করি । আইসােমেট্রিক , ক্যালিসথেনিক , বারবেল , বুঝলেন রােজ করি । দরুণ খিদে পায় । আপনার পায় ? ” 


বিষ্ঠু ধর কথা না বলে শুধু ' ঘোঁৎ ’ ধরনের একটা শব্দ করল । 


“ খিদের মুখে যা পাই তাই অমৃতের মতাে লাগে । এই সুখ আপনার আছে ? ”


 উত্তরের অপক্ষো না করেই লােকটি জগ করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নেমে শেষ ধাপ পর্যন্ত গিয়ে আবার উঠে এল । 


তিনবার এইভাবে ওঠানামা করে সে বিষ্টু ধরের পাঁচ গজ তফাতে দাঁড়িয়ে হাঁফাতে লাগল । হাত দুটো নামিয়ে বিষ্টু তখন খানিকটা দিশাহারার মতােই লােকটির কাণ্ড দেখছিল । ওর চোখে এখন রাগের বদলে কৌতুহল । মনে মনে সে ছিপছিপে শরীরটার সঙ্গে নিজের স্থূলত্ব বদলাবদলি করতে শুরু করে দিয়েছে ।


 “ খাওয়ায় আমার লােভ নেই । ডায়েটিং করি । ” ভারিক্কি চালে বিষ্টু ধর ঘােষণা করল এবং গলার স্বরে বােঝা গেল এর জন্য সে গর্বিত ।


লােকটি দু'পা এগিয়ে এসে বলল , “ কী রকম ডায়েটিং ! ” 


“ আগে রােজ আধ কিলাে ক্ষীর খেতুম , এখন তিনশাে গ্রাম খাই ; জলখাবারে কুড়িটা নুচি খেতুম এখন পনেরােটা ; ভাত খাই মেপে আড়াইশাে গ্রাম চালের ; রাতে রুটি বারােখানা । ঘি খাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছি গরম ভাতের সঙ্গে চার চামচের একবিন্দুও বেশি নয় । বিকেলে দু - গ্লাস মিছরির সরবত আর চারটে কড়াপাক । মাছ - মাংস দুই না, বাড়িতে রাধাগােবিন্দ বিগ্রহ আছে । আর হপ্তায় একদিন ম্যাসেজ করাই এখানে এসে । আমার অত নােলা নেই , বুঝলেন সংযম কেচ্ছাসাধন আমি পারি । হাটের ব্যানাে - ফ্যামাে আমার হবে না , বংশের কারাে হয়নি । বাজি ফেলে সত্তরটা ফুলুরি খেয়ে কলেরায় বাবা মারা গেছে , জ্যাঠা গেছে অম্বলে । ”


 “ এত কেচ্ছাসধন করেন ! বাঁচবেন কী করে ? ” 


লােকটি এগিয়ে এসে বিষ্টু ধরের ভূঁড়িতে হাত বুলিয়ে দিল । 


“ আঃ , সুড়সুড়ি লাগে , ” বিষ্টু হাতটা সরিয়ে দিয়ে কুপ্তস্বরে বলল , “ আমার বউ ওই কথা বলে । সকাল থেকে রাত অবধি বাবসা দেখি । সরষে , চিনি , ডাল নানান জিনিসের কারবার । এত খাটুনির পর এইটুকু খাদ্য । তারপর এই অপমান ।


 ” কে করল ? ” 


লােকটি আবার হাত বাড়াতেই বিষ্টু এক পা পিছিয়ে বলল ,


 “ না , সুড়সুড়ি লাগে । ”


 “ কে অপমান করল ? ”


“ কেন , আপনি হাতি - হিপাে বললেন না ! জলহস্থির ইংরিজি হিপাে তা কি আমি জানি না , আমি কি অশিক্ষিত ? ”


 “ না না , আমি আপনাকে অশিক্ষিত তাে বলিনি।” লােকটি বিব্রত হয়ে চশমা মুছতে মুছতে বলল , “আপনার ওজনটা খুব বিপজ্জনক হার্টের পক্ষে।”


 “ বিপজ্জনক মানে ? ” বিষ্ঠু ধর তাচ্ছিল্য প্রকাশের চেষ্টা করল , কিন্তু গলা দিয়ে বেরিয়ে এল ভয়ার্ত স্বর । “ আমি কি মারে যেতে পারি । ”


 “ তা পারেন । আর নয়তাে কেচ্ছাসাধনের কষ্ট করতে করতে , রােগে ভুগে ভুগে বেচে থাকবেন কয়েকটা বছর । ” 


বলেই লােকটি দু - হাত তুলে সামনে ঝুঁকে পিঠটা ধনুকের মতাে বেঁকাল । হাতের আঙুল পায়ে ছুইয়ে আবার সিধে হলাে । 


“ আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়লােক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না । ”


 “ কী রকম ! কী রকম ! ” 


লােকটি তার ডান কনুই শরীরে লাগিয়ে পিস্তল ধরার মতাে হাতটা সামনে বাড়াল । 


“ এইবার আমার হাতটা নামান তাে । ” 


অবিশ্বাসভরে বিষ্ঠু ধর হাতটার দিকে তাকাল । শিরা উপশিরা গাঁটসমেত হাতটাকে শুকনাে শিকড়ের মতাে দেখাচ্ছে । 


“ নামান নামান । ”



ফুলাে ফুলাে আঙুল দিয়ে বিষ্টু লােকটার কবজি চেপে ধরে নীচের দিকে চাপ দিল । নড়ল না এক সেন্টিমিটারও । ঠোট কামড়ে বিষ্টু জোরে চাপ দিল। হাতটা একই জায়গায় রয়েছে । বিষ্টু এবার সর্বশক্তি প্রয়ােগ করল । কপালে ঘাম ফুটছে । কিছু লােক দাঁড়িয়ে দেখছে । তাদের চোখে বিস্ময়, লােকটার সাফল্যে না বিষ্টুর ব্যর্থতায় বােঝা যাচ্ছে না । বিষ্টু লােকটার মুখের দিকে তাকিয়ে পাতলা হাসি আর চোখ পিটপিটানি দেখতে পেল । হাতটা সে নীচে নামাতে পারছে না । বিষ্টু হাল ছেড়ে দিয়ে ফোস ফোস করে নিশ্বাস ফেলতে লাগল ।


 “ কী করে পারলেন ? ” 


‘ জোরে বলতে শুধু গায়ের জোরই বােঝায় না । মনের জোরেই সব হয় । ইচ্ছাশক্তি দিয়ে শরীরের দুর্বলতা ঢাকা দেওয়া যায় । শরীর যতটা করতে পারে ভাবে , তার থেকেও শরীরকে দিয়ে বেশি করাতে পারে ইচ্ছার জোর । সেজন্য শুধু শরীর গড়লেই হয় না , মনকেও গড়তে হয় । শরীরকে হুকুম দিয়ে মন কাজ করাবে । আপনার মন হুকুম করতে জানে না তাই শরীর পারল না । ” 


বিষ্টু ধর বিষন্ন চোখে তাকিয়ে থেকে বিড় বিড় করে বলল , “ ইচ্ছে করে খুব রােগা হয়ে যাই । ” 


ঠিক এই সময়ই গঙ্গার তীর থেকে তীক্ষ্ণ চিৎকার ভেসে এল , “ কো ও ও ও ...। নি ই ই ই । কো ও ও ও ... নি ই ই ই । ” 


লােকটি গঙ্গার দিকে তাকাল । 



                  কোনি দ্বিতীয় পর্ব


                পিডিএফ ডাউনলোড করুন



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনাদের কোন প্রশ্ন থাকলে দয়া করে জানাবেন ।