![]() |
| ছবি :- পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পাঠ্যপুস্তক |
লেখক-:মতি নন্দী
লেখকের পরিচিত :- মতি নন্দী (১০ জুলাই ১৯৩১ - ৩ জানুয়ারি ২০১০) ছিলেন ভারতের কলকাতার একজন বাঙালি লেখক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মতি নন্দী ছিলেন মূলত ক্রীড়া সাংবাদিক এবং উপন্যাসিক ও শিশু সাহিত্যিক। তিনি আনন্দ পুরস্কার এবং সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। তার বিখ্যাত উপন্যাস 'কোনি'। লেখকের সম্বন্ধে আরো পড়ুন
পঁচিশজন প্রতিযােগী । বাইশটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে ।
স্টারটিং পয়েন্টে ভিড় । প্রতিযােগীরা তেল মাখায় ব্যস্ত । উদ্যোক্তা ঢাকুরিয়া স্পাের্টস ক্লাবের অনুরােধে ক্ষিতীশ প্রতিযােগিতার রেফারি অফ দ্য কোর্স । সাঁতারুদের সঙ্গে সঙ্গে যাবে নৌকোয় ।
স্টালটিং পয়েন্ট থেকে একটু এগিয়ে সে আর ভেলাে নৌকোয়া বসে ।
“ ক্ষিদ্দা , কে জিতবে বালাে তাে সুবীরই মনে হচ্ছে । ”
" সুবীরের নামা অন্যায় হয়েছে । এসব কম্পিটিশনে নামিদের থাকা উচিত নয় । ও তো ন্যাশনাল জুনিয়ার রেকর্ড হােল্ড করছে । ”
“ যা বলেছ । তবে বেশির ভাগই আনকোরা দেখছি । ”
ভেলাে সারি দিয়ে দাঁড়ানাে সাঁতারুদের পর্যবেক্ষণ করতে করতে বলল , “ ওই লাল কস্টুমপরা মেয়েটা কে বলাে তাে ? কথনে তাে দেখিনি । ”
এত দূর থেকে ক্ষিতীশ , পুরু লেনসের মধ্য দিয়ে , সাদা টুপি মাথায় , লাল রঙে মােড়া তুষারধবল একটি দেহমাত্র দেখতে পেল ।
" কে , তা আমি জানব কী করে ?"
“ না , এমনিই বলছি । বালিগঞ্জ ক্লাবের ট্রেনার প্রণবেন্দু বিশ্বাসকে দেখলুম কিনা মেয়েটার সঙ্গে । খুব বড়লোক মনে হলো । ওই যে সবুজ মােটরটা , ওটায় করে এসে নামল । সঙ্গে বাবা - মাও যেন রয়েছে । "
" তুই বড্ড বেশি দেখিস । "
“ না দেথে উপায় আছে , মােমের পুতুলের মতো চেহারা ! ওর পাশেই দ্যাখাে , পােড়ামাটির কেলে পিলসুজের মতো একটা । কী অদ্ভুত দেখাচ্ছে দ্যাখো । ”
ক্ষিতীশ দেখার চেষ্টা করল ৷ সেকেন্ড কয়েক তাকিয়ে থেকে তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল একটা শব্দ , “ কোনি ! ”
ঠিক তখনই স্টার্টারের বন্দুক গর্জে উঠল ।
সাঁতারুরা এগিয়ে যাবার পর ক্ষিতীশনের নৌকোটা পিছু নিল ।
সুবীর এবং আরাে গুটি দশেক ছেলে একঝাঁকে এগিয়ে গেছে । তারপরেও আর এক ঝাঁক । সব শেষে তিনটি মেয়ে ও দুটি বাচ্চা ছেলে ।
পাঁচশাে মিটার পর্যন্ত এরা পাঁচজন প্রায় একসঙ্গেই ছিল । তারপরই লাল কষ্টুম ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে শুরু করল ।
“ ক্ষিদ্দা , স্ট্রোক দেখেছ ! শরীরটাকে কেমন ভাসিয়ে রেখেছে । ”
ক্ষিতীশ কিছুক্ষণ লক্ষ করে বলল , " মাথাটা ঠিকমতাে নাড়ানাে হচ্ছে না । সেন্ট্রাল পােজিশনে না থাকলে শরীরের ব্যালান্স নষ্ট হয় , স্পিড ওকমিয়ে দেয় ; শরীরটা রােল করছে বড্ড বেশি । কনুই আরো উঠবে ...”
“ অ্যাই অ্যাই , অমনি তােমার শুরু হয়ে গেল খুঁত ধরা । ”
“ খুতি না ধরালে দোষ সারবে কী করে । ”
"ও কি তোমার ছাত্তর । "
“ নাইবা হালাে । ”
সামনের দু-ঝাঁকের সাঁতাদের কেউ কেউ এবার মস্থর হয়ে পিছিয়ে পড়ছে । ক্ষিতীশ ঘাড় ফিরিয়ে পিছনে তাকাল । বাচ্চা ছেলে দুটির সঙ্গে কোনি আসছে বৈঠার মতাে হাত চালিয়ে , দু - ধারে মাথা নাড়তে নাড়াতে । ওদের থেকে অন্তত কুড়ি মিটার সামনে আর একটি মেয়ে , সমান তালে একই গতিতে সাঁতরে চলেছে । লাল কস্টুমের মেয়েটি তার থেকে আরাে তিরিশ মিটার সামনে এবং একটি ছেলের থেকে হাত দশক পিছনে ।
“ কো ও ও নি ই ই । ”
সরােবরের পূর্ব তীর থেকে একটা চিৎকার ভেসে এল ।
ক্ষিতীশ আর ভােলাে একসঙ্গেই তাকাল , বছর পঁচিশের , শ্যামবর্ণ একটি রুগ্ন যুবক পাড় ঘেঁষে ছুটছে । পরনে ধূতি ও নীল শটি । চটি জোড়া হাতে ।
“ কো ও ও নি ই ই ... কো ও ও নি ই ই । ”
গলার স্বল্পটা আর্তনাদের মতাে শােনাচ্ছে । পাড়ে ভিড় জমেছে । সাঁতার দেখতে । তাদের ফাক দিয়ে দেখা যাচ্ছে সে ছুটছে । মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে পড়ে তাকাচ্ছে । মুখখানি অসহায় ।
“ কো ও ও নি ই । "
চিৎকারটা হতাশায় ভেঙে পড়ল । ক্ষিতীশ দেখল কোনিকে পিছনে ফেলে বাচ্চা দুটি এগােচ্ছে । লাল কাস্টুম দুটি ছেলেকে পিছনে ফেলে দিয়েছে ।
“ কে বলাে তাে ক্ষিদ্দা ? ”
“ জানি না , কোনাে কম্পিটিটারের বাড়ির লােক হবে হয়তো । ”
পাড়ের রাস্তা ধরে ধীর গতিতে সবুজ রঙ্গের একটা ফিয়াট চলেছে । গাড়ির জানালায় উৎকণ্ঠিত একটি পুরুষ ও একটি মহিলার মুখ । মাঝে মাঝে হর্ন দিচ্ছে ।
“ কো ও ও ই ই । ”
নৌকোটা ছপছপ শব্দে দাঁড় ফেলে এগােচ্ছে । একটা গাছের গুড়িতে হেলান দিয়ে নীলশার্ট পরা যুবকটি দাঁড়িয়ে । ক্রমশ সে ক্ষিতীশের চোখে ছােটো হয়ে ঝাপসা হতে শুরু করল । জলের উপর , অনেক পিছনে দুটি হাতের ওঠানামা হচ্ছে । তারপর আর দেখা গেল না হাত দুটো । পড়ন্ত রােদে মাঝে মাঝে চিক্ চিক করে উঠাছে ছিটাকে ওঠা জল ।
সামনে হই চই শােনা গেল । প্রথম প্রতিযােগী সাঁতার শেষ করেছে । সম্ভবত সুবীরই ।
কোনি জল থেকে উঠছে । সাঁতার শেষ করে অনেকেই তখন চুল পর্যন্ত আঁচড়ে ফেলেছে । মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে একজন ঢাকুরিয়া স্পাের্টিং ক্লাবের সারা বছরের কার্যকলাপের বিবরণ পাঠ করে চলেছে একঘেঁয়ে সুরে । কেউ লক্ষই করল না শেষ প্রতিযােগীর সীমায় পৌঁছানােটা ।
পাড়ের কাছে কাদা । কোনির পায়ের গােছ কাদায় ডােবা , শরীরটা সামনে ঝোকানাে , পাড়ে উঠতে গিয়ে সেই অবস্থাতেই সে তাকিয়ে রইল । চোখ দুটি লাল । সস্তার একটা কালাে কস্টুম শীর্ণ দেহের সঙ্গে লেপটে । হাঁপাচ্ছে , পিঠের দিকে পাঁজরের হাড়গুলাে চামড়ার নীচে বারবার কেঁপে উঠছে । কঁধের হাড় দুটো উঁচু ; সরু লম্বা হাত দুটো ঝুলছে কাঁধ থেকে । একটু দূরে নীলশার্ট পরা রুগ্ন যুবকটি দাঁড়িয়ে , মনােযােগে লাউডস্পিকারে কান পাতার ভান করে ।
টলতে টলতে কোনি উঠে এল । ওর বয়সিই দুটি ছেলে একটু জোরেই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল ।
" তবু তো শেষ করেছে । ”
“ পরের বছরের কম্পিটিশনে প্রথম প্লেস পেত যদি আর একটু দেরিতে পৌঁছত। "
কোনি আর একবার তাকাল । নীলশার্ট পরা যুবকটির মুখ চড় খাওয়া মানুষের মতাে অপ্রতিভ , অপমানিত ।
" সাঁতার শিখাবে ? ”
চমকে কোনি পিছনে ঘুরল ।
সেই লােকটা । কঁচাপাকা কদমছাঁট চুল । পুরু কাচের চশম ।
“ লাল কস্টুমপরা মেয়েটি সাঁতার শিখেছে তাই তোমাকে হারাল । তুমিও ওকে হারাতে পারবে যদি শেখে ।”
হঠাৎ কোনির দু'চোখ জলে ভারে এল । থরথরিয়ে ঠোট দুটি একবার কেঁপে উঠল । তারপরই চোয়াল শক্ত হয়ে বসে গেল ।
ক্ষিতীশের চাহনির দপ করে ওঠা শুধু ভেলােই লক্ষ করল এবং অস্বস্তিতে সে মাথা নাড়ল ।
“ এই যে দাঁড়িয়ে , এ কে ? ”
"আমার দাদা । "
নিজেকে টানতে টানাত কোনি ড্রেসিংরুমের দিকে চলে গেল । ক্ষিতীশ এগিয়ে গেল কোনির দাদাকে লক্ষ করে ।
‘‘ আমি একজন সাঁতারের কোচ । আমার নাম ক্ষিতীশ সিং । আমি আপনার বোনকে সাঁতার শেখাতে চাই । ”
ক্ষিতীশ কোনাে ভূমিকা না করে সােজাসুজি কথাগুলাে বলল ।
“ আমার নাম কমল পাল । আমি একসময় সাঁতার কেটেছি অ্যাপােলােয় । তখন আপনাকে আমি দূর থেকে দেখতাম । ” কমল তার পাণ্ডুর অসুস্থ চোখ দুটোয় উজ্জ্বল্য আনার চেষ্টা করল । তারপর মাথা নাড়িয়ে বলল , “ আমরা খুবই গরিব । সাঁতার শেখবার পয়সা নেই । ”
“ আমাকে পয়সা দিতে হবে না । ”
“ তা বলছি না । সাঁতার শিখতে হলে খরচ আছে , খাওয়া - দাওয়ার খরচ । আমি পারিনি সেইজন্য , পয়সা ছিল না খাওয়ার । বাবা প্যাকিং কারখানায় কাজ করত , টি বি - তে মারা গেল । সাঁতার কেটে এসে খিদেয় ছটফট করতুম । স্কুলে ঘুমিয়ে পড়তুম। বাবা মারা যেতে স্কুল ছাড়লুম সাতার ছড়লুম । আজ পাঁচ বছর হয়ে গেল । "
“ কী করেন আপনি ? ”
" আপনি বললে লজ্জা পাব । "
“ বেশ । তুমি কী করাে , বাড়িতে আর কে কে আছেন ? "
“ সাত ভাই - বােন , মা । আমি বড়াে , গত বছর মেজো ভাই ট্রেনের ইলেকট্রিক তারে মারা গেছে , সেজো কাঁচরাপাড়ায় পিসির বাড়িতে থাকে । তারপর কোনি আর দু বােন এক ভাই । আমি রাজাবাজারে একটা মোটর গ্যারেজে কাজ করি , ওভারটাইম করে শ ” দেড়েক টাকা পাই , তাতেই সংসার চলে । থাকি শ্যামপুকুরে বস্তিতে । "
কমল হাঁপিয়ে পড়ল এই কটি কথা বলেই । ভিতরে ভিতরে যেন উত্তেজিত হয়ে উঠেছে । কোনাে কুন্ঠা বা সংকোচ না করে সাধারণভাবেই নিজেদের অবস্থার কথা বলল । ওর হাঁপিয়ে ওঠার ধরনটা ক্ষিতীশের ভালাে লাগল না । ওর বাবা টি বি - তে মারা গেছে , এটা মনে পড়ে অস্বস্তি বােধ করল ।
“ নামকরা সাঁতারু হবার সখ আমার ছিল । কোনিটাকে দেখতুম ছােটো থেকেই ওর খেলাধুলােয় আগ্রহ । আমার ইচ্ছে করে ওকে কোনাে একটা খেলায় দিই । গঙ্গায় সাঁতার কাটে শুনেছি , দেখিনি কখনাে । দিনরাত টো টো করে শুনেছি ছেলেদের সঙ্গে । অনেকে অনেক কথা বলে আমাকে । আমি তাে বাড়িতে ফিরি শুধু ঘুমােবার জন্য । কে কী করছে কিছুই জানি না । তবু মাথা গরম হয়ে উঠলে দু - চার ঘা লাগাই । এর বেশি ওদের জন্য আমি আর কিছু করতে পারি না । ইচ্ছে থাকলেও ওকে সাঁতার শেখাবার সামর্থ্য আমার নেই । ”
'' সে দায়িত্ব আমার । "
“ তার মানে ? " ভেলো ব্যস্ত হয়ে এতক্ষণে মুখ খুলল । “ দায়িত্ব তােমার মানে ? ”
“ মানে বলতে যা বােঝায় তাই । " ক্ষিতীশ বিরক্তি জানিয়ে কমলকে লক্ষ করে বলল , " গার্জেনরা সাহায্য না করলে কোনাে ছেলেমেয়েকে শুধু কোচিং দিয়ে বড়ো করা যায় না । আমি শুধু বাড়ির সহযােগিতাটুকু চাই । বাদবাকি দায়িত্ব আমার । ”
“ আপনি দায়িত্ব নেবেন , সে তো ভাগ্যের কথা । ” কমলের চোখের পাণ্ডুরতা চকচক করে উঠল । “ কিন্তু আমি এক পয়সাও খরচ করতে পারব না । ধার করে কালকেই বারাে টাকা দিয়ে কস্টুম কিনে দিয়েছি । খুবই বাজে জিনিস । কখনাে ওর সাঁতার লেখিনি , এই প্রথম দেখলাম । কথা দিয়েছিল , মেয়েদের মধ্যে প্রথম হবেই । দেখলেন তাে কী হল ! "
ক্ষিতীশ ঘাড় নাড়ল ।
ভােলা বলল , " স্ট্রেংথই নেই , আদ্দেকের পর আর টানতে পারছিল না । ওকে এখন খুব খাওয়াতে হবে । তাই না ক্ষিদ্দা ? ”
" আমরা এখন চলি । ”
ক্ষিতীশ পিছনে মুখ ঘুরিয়ে দেখল দূরে কোনি দাঁড়িয়ে । ফ্রক পরে । কাঁধে প্লাসটিকের ব্যাগ ।
" আমার খুবই হচ্ছে , ওঁ সাঁতার শিখুক , বড়ো হােক , নাম করুক । " তারপর ইতস্তত করে কমল বলল , “ আর , যতটুকু পারি টেনেটুনে চালিয়ে খরচ করার চেষ্টা করব । ”
ওদিকে প্রাইজ দেওয়া হচ্ছে । নাম ডাকা এবং হাততালির শব্দ লাউডস্পিকারে ভেসে আসছে ।
“ ময়েদের মধ্যে প্রথম... ”
ক্ষিতীশ তাকিয়ে ভাইবোনের দিকে । প্রইজ না নিয়ে চলে যাচ্ছে উলটো দিকের পথ ধরে । ভাঙা রেলিংয়ের ফাক দিয়ে । গলে রাস্তায় পড়বে । কমল গলে বেরিয়েছে । কোনি কাত হয়ে মাথা নীচু করে । ঝটকা দিয়ে সে এবার ফিরে দাঁড়াল ।
"...বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের হিয়া মিত্র । টাইম পঁয়ত্রিশ মিনিট আঠারাে সেকেন্ড । "
কোনি মাথা নামিয়ে ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে গেল ।
“ তোমার কি মাথা খারাপ হলাে নাকি ক্ষিদ্দা ! "
“ কী করে বুঝলি । ”
“ ওই পিলসুজামার্কা সিড়িঙ্গে , কেষ্ট তুলসীর মতাে রং , খেতে পরতে পায় না , ওকে তুমি সাঁতার শেখাবে , আবার দায়িত্বও নেবে
" হ্যাঁ , তা না হলে কি শেখানাে যায় ? ”
“ দায়িত্ব , কথটিার মানে ? "
“ মানে , খাওয়া - পরার দায়িত্ব , মানসিক গড়ন , যেটা সব থেকে ইমপর্ট্যান্ট , তাই গড়ে তােলার দায়িত্ব , রেগুলার ট্রেনিং কারানোর দায়িত্ব , এইসব আর কী । ”
“ তা হলে তাে ওকে বাড়িতে এনে রাখতে হয় । ”
“ দরকার হলে রাখতে হবে । এককালে গুরুগৃহে থেকেই তাে শিষ্যরা শিখতে । সিস্টেমটা খুব ভালাে । ”
" সিস্টেমের মধ্যে বউদির কথাটা মনে রেখেছে তাে ? ”
ক্ষিতীশ রেগে উঠে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল । থেমে , কান পাতল লাউডস্পিকারে ।
“ কনকচাঁপা পাল , আন - অ্যাটাচড় । কনকচাপা পাল । ” তারপর মৃদু ফিসফিস শােনা গেল , “ বােধহয় চলে গেছে । থাক রেখে দাও । ”
ক্ষিতীশ দেখল , সবুজ ফিয়াটের ধারে লাজুক মুখে হিয়া দাঁড়িয়ে । আনন্দ ফেটে পড়ছে ওর দুই গালের টোলে । এক মহিলা বাক্সটা তুলে মেডেলটা দেখছে আর হাসছে । প্রণবেন্দু ওদের সঙ্গেই দাঁড়িয়ে । সুপুরুষ সুবেশ এক ভদ্রলােককে সে কী একটা বােঝাবার জন্য হাত পাড়ি দিয়ে বাটারফ্লাই স্ট্রোকের ভঙ্গি করল ।
“ সামনের বছর দেখা যাবে । ” নিজেকে উদ্দেশ করে আপন মনে ক্ষিতীশ বলল ।
“ কিছু বলছ ক্ষিদ্দা ? ”
ক্ষিতীশ জবাব দিল না ।
“ শেখাবে যে , জল কোথায় ? জুপিটারে তুমি আর ট্রেনার নও । তাহলে মেয়েটাকে কোথায় নামিয়ে শেখাবে ? অন্য ক্লাবে তােমায় যেতেই হবে । ”
“ না , আমি জুপিটারেই ওকে শেখাবে । দেখি কে আমায় আটকায় । তার আগে আমাকে রােজগারে নামতে হবে রে ভেলাে । এখন আমার টাকা চাই । বিষ্টু ধরের সঙ্গে দেখা করা দরকার । ”
