নমস্কার বন্ধুরা, wbgolpo ওয়েবসাইটে তোমাদের স্বাগত জানাই | আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি নবম শ্রেণীর সাহিত্য সম্ভার থেকে নেওয়া একটি গল্প "আমার ছোটোবেলা। "
![]() |
ছবি :- পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পাঠ্যপুস্তক |
"গল্প :- আমার ছোটোবেলা"
"লেখিকা :- আশাপূর্ণা দেবী"
আমার ছেলেবেলা? সে কি আজকের কথা বাপু? কলকাতার রাস্তায় তখন পালকি চলত। ভাবো?
আহা, এখনো কোনো ঝিমঝিমে দুপুরে যখন ঘরের মধ্যে চুপচাপ শুয়ে থাকি। হঠাৎ হঠাৎ যেন কোন সুদূর থেকে পালকি বেহারাদের সেই হুকুম হাকুম হুকুম হাকুম আওয়াজ বুকের মধ্যে এসে ধাক্কা মেরে চলে যায়। আর তখন চোখ বুঝে ভাবতে ইচ্ছে করে, শব্দটা উত্তর কলকাতার একটা বারান্দাওয়ালা বাড়ির সামনে এসে থামল। আর ‘ঘাগরা” পরা একটা ছোট্ট মেয়ে ছুটে বারান্দায় এসে মুখ ঝুঁকিয়ে দেখতে পেল, মাটিতে নামানো পালকি থেকে কৌশলে আগে একটা পা বার করে, তারপর হেঁট করা মুণ্ডুটা বার করে আর তারপরে সমস্ত শরীরটাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন বড়ো মাসিমা, কি মেজদিদিমা। ঝামাপুকুরের ভাবিনীপিসি, অথবা ফড়েপুকুরের নেত্যঠানদি। এঁরাই আসতেন। মাঝে মাঝেই।
একা একা। হ্যাঁ, তা এঁদের একা আসায় ভয় ছিল না। কারণ এঁদের পরনে খান, গায়ে গহনার বালাই নেই, মাথা ন্যাড়া। কী করবে চোরডাকাত? আর একা আসতে হলে পালকি ছাড়া গতি কি? রিকশা তো আর ছিল না। রিকশার নামও শোনেনি তখন কলকাতা।
চোখ বুজলে দেখতে পাই—সুকৌশলে বেরিয়ে এলেন। মাটিতে দাঁড়ালেন, আঁচলের গিঠ খুলে ভাড়া মিটিয়ে দিলেন।
আমার ছেলেবেলা? সে কি আজকের কথা বাপু? কলকাতার রাস্তায় তখন পালকি চলত। ভাবো?
আহা, এখনো কোনো ঝিমঝিমে দুপুরে যখন ঘরের মধ্যে চুপচাপ শুয়ে থাকি। হঠাৎ হঠাৎ যেন কোন সুদূর থেকে পালকি বেহারাদের সেই হুকুম হাকুম হুকুম হাকুম আওয়াজ বুকের মধ্যে এসে ধাক্কা মেরে চলে যায়। আর তখন চোখ বুঝে ভাবতে ইচ্ছে করে, শব্দটা উত্তর কলকাতার একটা বারান্দাওয়ালা বাড়ির সামনে এসে থামল। আর ‘ঘাগরা” পরা একটা ছোট্ট মেয়ে ছুটে বারান্দায় এসে মুখ ঝুঁকিয়ে দেখতে পেল, মাটিতে নামানো পালকি থেকে কৌশলে আগে একটা পা বার করে, তারপর হেঁট করা মুণ্ডুটা বার করে আর তারপরে সমস্ত শরীরটাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন বড়ো মাসিমা, কি মেজদিদিমা। ঝামাপুকুরের ভাবিনীপিসি, অথবা ফড়েপুকুরের নেত্যঠানদি। এঁরাই আসতেন। মাঝে মাঝেই।
একা একা। হ্যাঁ, তা এঁদের একা আসায় ভয় ছিল না। কারণ এঁদের পরনে খান, গায়ে গহনার বালাই নেই, মাথা ন্যাড়া। কী করবে চোরডাকাত? আর একা আসতে হলে পালকি ছাড়া গতি কি? রিকশা তো আর ছিল না। রিকশার নামও শোনেনি তখন কলকাতা।
চোখ বুজলে দেখতে পাই—সুকৌশলে বেরিয়ে এলেন। মাটিতে দাঁড়ালেন, আঁচলের গিঠ খুলে ভাড়া মিটিয়ে দিলেন।
চার-চারটে গাঁট্টাগোট্টা পালকি বেহারা সোয়ারি নামিয়ে দিয়ে তেলচিটে গামছা দিয়ে গায়ের ঘাম মুছতে মুছতে, চকচকে ছোট্ট একটা গোল 'দুয়ানি' নিয়ে হৃষ্টবদনে, ফের পালকি উঠিয়ে নিয়ে চলে গেল। স্রেফ একটা মাত্র দুয়ানি। এর ওপর যদি আবার কোনো দয়াবতী সোয়ারি বাড়তি একটি তামার পয়সা ছুড়ে দিয়ে বলতেন, 'অনেক ঘেমেছিস, নে জলপানি খেগে যা— 'তাহলে সেই চারখানি মুখের আট পাটি দাঁত ? আহা যেন রোদলাগা আয়নার মতো ঝলসে উঠত।
বাড়ো ‘অল্পে সন্তুষ্ট' কাল ছিল বাপু আমাদের ছেলেবেলার কালটি। 'লোকজন' অল্পে সন্তুষ্ট, ছেলেপুলে অল্পে সন্তুষ্ট, ধোবা-নাপিত, মুটে বেহারা গাড়োয়ান—সবই ওই।
ধোবাকে (মানে আমি যাকে দেখেছি তাকে) যদি দু'কুড়ি কাপড় জামার সঙ্গে, গোটা দশ-বারো ছোটো জামা-ফ্রক, পাঁচহাতি ধুতি, শাড়ি, ফাউ কাচতে দিয়ে, দুটো পয়সা 'জল খাস' বলে ফেলে দেওয়া হতো, আহ্লাদে বিগলিত হয়ে যেত সে। নাপিত? সে তো বড়োদের চুল ছাঁটার সময় দু'চারটে ছোটো মাথা অবলীলায় অক্লেশে 'ফাউ' বলে ধরে নিয়ে পুঁচিয়ে ছেটে দিয়ে চলে যেত। তবে তাদের ন্যাড়া করতে হলে অবশ্য নগদ একটা ডবল পয়সা দিতে হতো। সে পয়সা তোমরা নিশ্চয় চোখেও দেখনি? গোলগাল ভারীসারি একটি তামার চাকতি।
'ন্যাড়ামাথা রাজার' (সপ্তম এডোয়ার্ডের) মুখ আঁকা। যাক—তোমরা হয়তো বলে বসবে ধোবা নাপিতের গল্প আবার কী শুনব? শোনালাম কেন জানো? শুধু এই কথাটি বলতে, আমরা ছেলেবেলায় সন্তুষ্ট মুখের ছবিটা যে কেমন, তা দেখেছি। সে জিনিসটি যে কী, তোমরা দেখতে পাও? আশে পাশে, ধারে কাছে, আয়নার সামনে?
তোমাদের একালের ছোটোদের তো দেখি মুখের বুলিই হচ্ছে, 'ধেৎ! ভাল্লাগছেনা।” কেন যে ‘ভাল্লাগছে না তা হয়ত তো তোমরা নিজেরাই জানো না। আসল কথা আশেপাশে কেবলই না ভালোলাগা মূর্তি দেখে দেখেই এই অবস্থা। আমাদের ছেলেবেলায় বাপু আমাদের সবসময় খুব ভালো লাগত। ‘ভাল্লাগেনা' শব্দটাই জানতাম না।
সকালবেলা উঠে শুধু শুধুই ভালো লাগছে সেই 'অকারণ ভালোলাগা'র সোনালি পাতাটি দিয়ে মোড়া আছে আমার ছেলেবেলা। অথচ দ্যাখো কীই-বা ছিল তখন? এ যুগের পক্ষে ‘কিছুই না’। গ্রামগঞ্জের কথা বাদ দাও, এই খাস কলকাতা শহরের যা যা ছিল না, তা শুনলে তোমাদের চোখ গোল্লা হয়ে যাবে। খাস কলকাতারই মেয়ে তো আমি, এখানেই বড়ো হয়েছি। এখনো এখানে বসে বসেই বুড়ো হচ্ছি। আর দেখে চলেছি কতই পরিবর্তন।
তবু একথা তো স্বীকার করতেই হবে, সেই গৌরবের দিনেও কলকাতায় কী কী ছিল না তার তালিকা করতে বসলে, স্রেফ একখানা ছিল না'-র অভিধান হয়ে যাবে।
আমাদের ছেলেবেলায় শুধু যে রিকশাই ছিল না তা নয়, বাসও ছিল না। বাসের নামও জানা ছিল না। ভাবতে পারো? ছিল শুধু ট্রাম গাড়ি। আর ঘোড়ার গাড়ি। অবশ্য ঘোড়ার রকম রকম গাড়ি। ল্যান্ডো, ফিটন, রুহাম, টমটম এবং ছ্যাকড়া।
মোটরগাড়ি এক-আধটা দেখা যেত বটে, সাহেব সুবোদের, কিংবা নেহাৎ বড়োলোকদের। হুডখোলা গাড়ি। হাওয়া গাড়িই বলা হতো বেশিরভাগ। ট্যাক্সি? কই ?
আমাদের ছেলেবেলায় 'সার্বজনীন পুজো' ছিল না, মাইক ছিল না, টুনিবাল ছিল না, পুজোর জন্য চাঁদা চেয়ে চেয়ে বেড়ানো ছিল না। ভদ্রবাড়ির মেয়েদের রাস্তায় বেরোনোর নিয়ম ছিল না। আকাশবাণী, হাওয়াই জাহাজ ছিল না। তা রিকশা গাড়িই যখন ছিল না, তখন কি আর এরোপ্লেন থাকবে? ছিল না। আমরা একটু বড়ো হবার পর উঠল। সে কী উৎসাহ উত্তেজনা। আকাশে সাড়া পেলেই ছুট ছুট ছাতে ছুট। এরোপ্লেনকে দেখে বিশ্বাস করতেই হলো মেঘনাদের মেঘের আড়ালে থেকে 'বিমান যুদ্ধটা নেহাৎ বানানো গল্প নয়। 'মেঘনাদ' মানে তো মেঘের গর্জন? তা এরোপ্লেনের গর্জনটা ঠিক তাই নয় কি?
এই ভাবতে খুব ভালো লাগত আমার। রামায়ণ-মহাভারতের গল্প তো সেই কোন ছোট্টবেলা থেকেই শুনতাম। লোডশেডিং বলে যে একটা ভাষা সৃষ্টি হবে সেই ধারণাই কি ছিল? ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বাতি তো ছিল না।
কাজেই বিদ্যুতজনিত যা কিছু তার সবই বাদ দিতে পারো নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে। বিজ্ঞানের অবিশ্বাস্য উন্নতি আর আরাম-সুবিধের যত কিছু উপকরণ সবই বিগত পঞ্চাশ-ষাট বছরের মধ্যেই ঘটেছে আর হয়েছে। কাজেই তোমাদের যা আছে তার সাত ভাগের এক ভাগও ছিল না আমাদের। কিন্তু তাভে বলে ভেবো না লোকের জাঁকজমক সমারোহ ছিল না। সে শুনলে আবার তোমরা হাঁ হয়ে যাবে। বর বিয়ে করতে যাবার সময় ফুল সাজানো মোটরগাড়ি অবশ্য দেখতে পাওয়া যেত না। কিন্তু যা দেখা যেত সে কম নয়। রাস্তায় ব্যাগপাইপে ইংরেজি বাজনা, গোরার বাদ্যি'র রব উঠলেই ছোট জানলায় বারান্দায় ছাতে। কারণ এ হচ্ছে ঘটার বরযাত্রা।
আর ঘটার হলেই চার ঘোড়ার, আট ঘোড়ার, ষোলো ঘোড়ার, এমনকী বত্রিশ ঘোড়ার গাড়িও দেখা যেতে পারে। তার সঙ্গে ওই ইংরেজি বাজনা, আর অ্যাসিটিলিন গ্যাসবাতির আলোকসজ্জার শোভাযাত্রা। তেমন বেশি জাঁকজমক হলে, কাগজের তৈরি বৃহৎ বৃহৎ পুতুলের শোভাযাত্রা। হাতির সমান মাপে হাতি, ঘোড়ার মাপে ঘোড়া, উট প্রমাণ উট, তাছাড়া দশমুণ্ড রাবণ, নাক কান কাটা সুর্পনখা, হাত-পা ছড়ানো তাড়কা রাক্ষুসী। আবার রামসীতা, রাধাকৃষ্ণ, হরপার্বতী এসবও থাকত।
ওইসবের মধ্যে দিয়ে কপালে জবির ঝালর ঝোলানো ঘোড়ারা যখন কদমে কদমে ছুটত, সত্যিই একটা দৃশ্য ছিল।
ছেলেবেলার গল্প শুরু করার বিপদ আছে। স্মৃতির সমুদ্রটি উথলে ওঠে।
মনে পড়ে যায় বিজয়াদশমীর আনন্দ। সরস্বতী পুজোর উৎসব। তবু তো শুধু দোয়াত কলমের পুজো। তবু কী উত্তেজনা। বাসন্তী রঙের কাপড় পরাই চাই। পুজোর আগে যেন কুল খাওয়ার চিন্তাও না করি। .... পুজোর দিনে যেন ফস করে এক লাইন পড়ে না ফেলি....
আগের রাত্রে দেয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডারগুলো উলটে উলটে রাখা হচ্ছে; বইখাতা সরিয়ে রাখা হচ্ছে,
পাছে ছুঁয়ে বসি। নিষ্ঠার সেই আনন্দ, বড়ো সুখের। রথ দোল কীসে না আমোদ? ছোটো ছোটো মাটির রথ
টানাতে আমোদ। দোল খেলা তো অবশ্য খুব মাত্রা মাপা ছিল আমাদের। কিন্তু প্রধান আনন্দ তো পাবণীর। পালে পার্বণে একটি করে চকচকে রুপোর দুয়ানি পাওয়া যেত। তখন সেটাই রাজ ঐশ্বর্য। সেটা নিয়ে কী করা হবে। তিনবোনে মিলে দু-চার দিন ধরে পরামর্শ চলত। ক্ষীরের কুলপি? গোলাপি রেউড়ি নকুলদানা? কাচকড়ার পুতুল? ফুঁকো মালা? লাল ফিতে? দিদি রেখে বলত, 'যা যা, যতই বলিস তুই তো শেষ অবধি সেই রুলটানা খাতা কিনে পয়সাটা খরচা করে ফেলবি।'
কথাটা সত্যি। এই একটা জিনিসে দারুণ দুর্বলতা ছিল আমার ছেলেবেলায়। রুলটানা খাতা। দু-আনায় দু-খানা পাওয়া যেত। মলাট বাঁধানো হলে একটা। পয়সা হাতে পেলেই এ ইচ্ছেটা পেয়ে বসত। খাতাটা কেনা হলেই, পয়সা সার্থক।
একবার আমার সেজদার একখানা হারানো বই খুঁজে দেওয়ার পুরস্কারস্বরূপ, সেজদা আমায় শক্ত মলাটের ইয়া মোটকা একখানা খাতা উপহার দিয়েছিলেন। যদিও সেজদাও তখন 'স্কুলবয়', তবু নিজের টিফিন-ফিফিনের পয়সা থেকেই দিয়েছিলেন আর কি ... আহা সেজদাকে সেদিন স্বর্গের দেবতা মনে হয়েছিল। আর ওই রুলটানা মোটকা খাতাটাকে স্বর্গের একটা টুকরো। আহা সে আমাদের স্মৃতি আজও যেন মনের মধ্যে ঝকমকে হয়ে আছে। তারপর তো জীবনে কতই প্রাপ্তি ঘটেছে, কিন্তু জীবনে সেই প্রথম স্নেহের উপহার, যা কেউ আমার মনটা বুঝে নিয়ে দিয়েছে তার কী তুলনা হয়। ভালোবাসাকে বুঝতে পারা, স্নেহকে অনুভব করা, এটা ছিল আমাদের কালে। খাতাটার দাম ছিল নাকি চার আনা। মাকে একবার বলতে শুনেছিলাম, একখানা খাতার দাম চার চার আনা পয়সা! বাবাঃ ক্রমশই জিনিসপত্তরের দাম কী বেড়েই যাচ্ছে .....
"ছেলেবেলা'র পাওয়া সেটাই হচ্ছে পরম পাওয়া, তার স্বাদই আলাদা। সোনালি স্তবকে মোড়া থাকে সেই পাওয়ার স্মৃতি।
লখিকার পরিচিত :-
"আশাপূর্ণা দেবী" (১৯০৯-১৯৯৫) অন্যতন প্রধান বাঙালি লেখিকা। জন্ম কলকাতায়। স্কুল-কলেজে পড়ার সুযোগ ঘটেনি। অথচ অসামান্য সূক্ষ্ম দৃষ্টি সংবেদনশীলতা ও পরিচিত সমাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি বাঙালি মধ্যবিত্ত জীবনকে আশ্চর্য দক্ষতায় তার গল্পে উপন্যাসে তুলে ধরেছিলেন। তিনি দির্ঘ জীবনে অসংখ্য উপন্যাস, গল্প এবং ছোটোদের জন্য অজস্র বই লিখেছেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য "ছোট ঠাকুরদার কাশীযাত্রা , "প্রথম প্রতিশ্রুতি", "সুবর্ণলতা" ,"বকুলকথা ", " অগ্নিপরীক্ষা ", " সাগর শুকায়ে যায় ", " শশীবাবুর সংসার ", " সোনার হরিণ", ইত্যাদি। তাঁর রচিত ৬৩টি গ্রন্থ বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে। তিনি রবীন্দ্র পুরস্কার, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার", "জ্ঞনপীঠ পুরস্কার, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ডি লিট' এবং নানা সরকারি খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।লেখিকার সম্বন্ধে আরো পড়ুন